
উড়িষ্যায় পরিযায়ী বাঙালি ফেরীওয়ালা রুহুল আমিনের উপর হামলা, উত্তপ্ত মানবাধিকার মহল।
বিজেপি শাসিত রাজ্য উড়িষ্যায় সাম্প্রতিক সময় আবারও এক বাঙালী পরিযায়ী শ্রমিকের উপর বর্বরোচিত হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে। এবার হামলার শিকার মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানার অন্তর্গত এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় ফেরীওয়ালা রুহুল আমিন।
স্থানীয় সূ্ত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, উড়িষ্যায় ব্যবসার কারণে অবস্থানরত রুহুলকে একটি উত্তেজিত উচ্ছৃঙ্খল গোষ্ঠী হঠাৎ আক্রমণ করে। তাকে লক্ষ্য করে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক স্লোগান দেওয়া হয় এবং শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, হামলার এক পর্যায়ে তার দিকে লাথি ছুঁড়ে মারা হয়, যা কেবল একজন ব্যক্তির উপর আঘাত নয়, সমগ্র বাঙালী জনগোষ্ঠীর আত্মসম্মানের উপর চরম আঘাত।
হামলার ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে রুহুলকে অসহায় অবস্থায় দেখা গেছে। ভিডিও প্রকাশের পর দেশজুড়ে মানবাধিকার কর্মী, সমাজকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জন্মেছে।
ঘটনাটি ‘মব লিঞ্চিং’ ও ধর্মীয় বিদ্বেষকেন্দ্রিক আক্রমণের সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বহু বিশ্লেষক ও নাগরিক মন্তব্য করছেন যে, এই লাথি শুধু রুহুল আমিনের মুখের উপর নয়, এই লাথি পড়েছে আসলে বাঙালী জাতির বুকের উপর, তার অস্তিত্ব, সংস্কৃতি ও আত্মসম্মানের উপর।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আইনজীবী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ও নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে এই ধরনের বিদ্বেষ ও সহিংসতা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
হামলার ঘটনায় উড়িষ্যা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত বিবৃতি না আসায় আরও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। জনগণের দাবি, ঘটনাটির ন্যায়সঙ্গত তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে হবে এবং পরিযায়ী বাঙলি শ্রমজীবী মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।