logo

নিজের স্বামী BLO তার জ্যান্ত স্ত্রীকে ভোটার লিস্টে মৃ*ত বলে ঘোষণা, এমনটাই অভিযোগ উঠে আসছে স্বামীর বিরুদ্ধে

স্বামী, স্ত্রীর বিবাদের জেরে স্ত্রীকে 'মৃত' দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে জীবিত স্ত্রীর নাম বাতিল করে দিলেন বিএলও'র দায়িত্বে থাকা স্বামী।
সেই থেকে জীবিত হওয়ার চেষ্টায় হন্যে হয়ে ঘুরেছেন মৃত স্ত্রী টুম্পা দাস।

কিন্তু কিছুই করতে পারেন নি।

এস আই আর ফর্ম না পেয়ে দেশ ছেড়ে যেতে হবে এই আশঙ্কায় সমস্ত প্রামাণ নথিপত্র নিয়ে বৃহস্পতিবার "মৃত" স্ত্রী টুম্পা স্বয়ং তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসকের কাছে।
সমস্ত ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগও করেন, বিএলও স্বামী প্রভাকর মণ্ডলের বিরুদ্ধে।

স্ত্রীর অভিযোগ, "স্বামী পিলকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে বরাবর এলাকায় বিএলও হিসেবে কাজ করে আসছেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত সব ঠিক ঠাক চলছিল।
ওই বছরই আমি পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলাম একটি দলের হয়ে।
এরপর ২০২৪ সাল থেকে আমাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তির কারণে পিলকিতে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়ি সুতির আমুহা কদমতলা গ্রামে চলে আসি। সেখানেই রয়েছি আমি।
২০২৫ সালে সাগরদিঘির বালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৯ নম্বর বুথের ভোটার তালিকা দেখতে গিয়েই নজরে পড়ে আমাকে মৃত বলে ঘোষণা করে বিএলও স্বামী,
মৃত বলে আমাকে এস আই আর ফর্মও দেওয়া হয়নি। ফের তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা করলেও তা করতে পারিনি। তাই ভোটার তালিকায় মৃতই রয়ে গেছি এখনও।"
এরপর বৃহস্পতিবার টুম্পার মুখে সমস্ত ঘটনা শুনে বিষ্মিত জঙ্গিপুরের মহকুমা শাসক গাদ্দাম সুধীরকুমার রেড্ডি ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন সাগরদিঘির বিডিওকে। শুক্রবারই বিএলও স্বামী প্রভাকরকে ডেকে পাঠানো হয় সাগরদিঘি ব্লক অফিসে। প্রভাকরকে এবারও এসআইআর'য়ের বিএলও'র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিডিও শতাংশুনাথ চক্রবর্তী বলেন," তার স্ত্রীকে মৃত দেখিয়ে কেন তা নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তার উত্তর চেয়েছেন তিনি।

টুম্পা বলেন, "২০১৩ সালে আমার বিয়ে হয় পিলকি গ্রামে। একটি ছেলেও হয়। আমি প্রতিবারই ভোট দিয়েছি পিলকির ১৪৯ নম্বর বুথে। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটেও প্রার্থী হই একটি দলের। কিছুদিন পর থেকে স্বামীর সঙ্গে গোলমালের শুরু। চলে যায় সুতিতে বাবার বাড়িতে। সেই থেকে সেখানেই আছি।"

টুম্পার অভিযোগ,"বেঁচে থাকা সত্বেও কেন আমাকে এভাবে মৃত দেখানো হল? বিএলও'র এত ক্ষমতা? আমি এর শাস্তি চাই। শুধু তাই নয়, তার দুই বোন প্রীতিলতা মণ্ডল ও প্রণতি মণ্ডলের বিয়ে হয়ে গেছে ১২ বছর আগে জিয়াগঞ্জ ও তেঁতুলিয়ায়। ভোটার তালিকায় পিলকি ও তাদের শ্বশুরবাড়িতেও নাম রয়েছে দু'জনেরই। দু জায়গাতেই তারা প্রতিবার ভোট দেয়। এসআইআর ফর্মও নিয়েছে দু জায়গাতেই।”

অভিযুক্ত বিএলও স্বামী প্রভাকরকে শুক্রবার ফোন করলে তিনি বলেন, "স্ত্রী টুম্পাকে ভুল করে মৃত দেখিয়ে ফেলেছি। আমার ভুল হয়ে গেছে। দুই বোনের নামও দু জায়গায় ভোটার তালিকায় আছে এটা ঠিক। আমি তাদের এবারে বলে দিয়েছি এক জায়গা থেকে নাম কাটার কথা। এনিয়ে বিডিও আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন ব্লক অফিসে। আমি সেখানেই রয়েছি।”

"মৃত" স্ত্রী টুম্পা জানান, শুক্রবার সাগরদিঘির বিডিও আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন জানুয়ারি মাসে নির্দিষ্ট ফর্মে ভোটার হওয়ার আবেদন করলে আমি নাকি আবার জীবিত হয়ে উঠব। এখন দেখি কবে তাদের দয়ায় আবার বেঁচে উঠি আমি!
টুম্পা দাস একসময়ে সাংবাদিক দের সামনে মুখোমুখি হয়ে কান্নায় ভেঙে পরেন।

**পুরো খবরের ভিডিও লিংক দেওয়া হলো নিচে**👇 YOUTUBE এবং FACE BOOK

https://youtu.be/HioAFXZz6qY?si=yjqr1aKNMBnMY36N

https://www.facebook.com/share/v/1KFxWaib9H/

4
105 views