logo

মানবসেবার নিয়োজিত কলকাতার Embassy of Hope এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিত দাস।

রিপোর্টার- সুরজিৎ কোলে, হাওড়া।

জীবে প্রেম করে যেই জন , সেইজন সেবিছে ঈশ্বর। স্বামীজীর এই অমোঘ বাণীটিকে স্মরণ রেখে কলকাতার বাগুইহাটি থানার অন্তর্গত দ্রাশদ্রোনি মন্দির বাগান এলাকায় অবস্থিত Embassy of Hope প্রায় ১২ জন বালকদের প্রতিপালন করে চলেছেন বিগত দশ বছর ধরে এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা শুভজিত দাস ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর একমাত্র কন্যা। ২০১৫ সালে তিনি এই অনাথ আশ্রমটি তাঁর নিজের বাড়ি "প্রার্থনা" তে প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্বে কর্মসূত্রে তিনি একটি অনাথশ্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১০ সাল নাগাদ সেই অনাথ আশ্রম কোনো সমস্যাজনিত কারণে বন্ধ হয়ে গেলে,ঘটনাচক্রে সেই অনাথ বাচ্চাদের পুনরায় বিভিন্ন রেল স্টেশন, ইত্যাদি স্থানে ছেড়ে দিয়ে আসতে হয়। যা শুভজিত বাবুর কাছে খুবই হৃদয়বিদারক ছিলো। এই ঘটনা শুভজিত বাবুর মনে ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। তখন থেকেই তিনি ভাবতে শুরু করেন ,তিনি যদি তার একক প্রচেষ্টায় যদি একটা অনাথ আশ্রম করেন ,তবে সেইদিনই বোধহয় তার বুকের জ্বালা জুড়াবে। তিনি চেষ্টা করবেন অন্তত একটা বাচ্চার হলেও প্রতিপালনের দায়িত্ব তিনি নিজে নেবেন। এই ব্যাপারে তিনি তাঁর পরিবার থেকে পুরো সমর্থন পান। তাঁর স্ত্রী ও তাঁর কন্যা এই কাজে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সেইমতো প্রথমে শুভজিত বাবু শুরুতে ২জন অনাথ বাচ্ছার প্রতিপালনের দায়িত্ব নেন। তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারপর সেই ২জন থেকে বর্তমানে ৫থেকে প্রায় ১২ বছর বয়সী ১২ জন অনাথ বাচ্চা ছেলেদের নিয়ে তিনি তাঁর নিজ ব্যয়ে তাদের থাকা, খাওয়া, জামাকাপড়,পড়াশোনা, স্কুল, ঔষধপত্র ও সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে সুন্দরভাবে প্রতিপালন করে চলেছেন হাসিমুখে। এটাই তার সুখের সংসার। আমাদের সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভজিত বাবু জানান বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি অফিসে কর্মরত। কিন্তু তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও মানব সেবার দৃষ্টিকোন থেকে দাঁড়িয়ে তিনি এইসব বাচ্চাদের প্রতিপালন করেন।ভাবলে অনেকে অবাক হবেন যে, তার দোতলা বাড়িটিতে তিনি নিজে একতলায় থাকেন, কিন্তু ওই ১২জন বাচ্চাদের তিনি তার বাড়ির দোতলায় স্থান দিয়েছেন। তারা একটি কোচিং সেন্টারে পড়াশুনা করে। সম্প্রতি শুভজিত বাবু তাদের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকা শেখাবার জন্য একজন অঙ্কন শিক্ষক নিয়োজিত করেছেন। শুভজিত বাবুর কাছে প্রতিপালিত হওয়া বাচ্চারা বিভন্ন শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। শুভজিত বাবু জানান ১২টি বাচ্চার প্রতিপালনের কাজ খুবই ব্যায়সাধ্য ব্যাপার। এই ব্যাপারে যদি কোনো সহৃদয় ব্যাক্তি স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ,তাহলে তিনি খুবই উপকৃত হবেন এবং আগামীদিনে আরো বেশি সংখ্যক বাচ্চার দায়িত্ব নিতে তিনি সক্ষম হবেন। কারণ তিনি মনে প্রানে বিশ্বাস করেন জীবসেবাই হলো শিব সেবা।আজকের ব্যাস্ততা, স্বার্থপর পৃথিবীতে শুভজিত বাবুর মতো পরোপকারী, সমাজসেবী মানুষের দেখা পাওয়া খুবই দুর্লভ।

12
3888 views