logo

ইসরায়েল-পাকিস্তান গোপন মিশন: ইরান বিরোধী চক্রান্ত নাকি নতুন কূটনৈতিক সমীকরণ?


ইসরায়েলের মিডিয়া পাকিস্তান সম্পর্কে এমন একটি তথ্য ফাঁস করেছে, যা সম্পর্কে না ভারতীয়দের কোনো ধারণা ছিল, না পাকিস্তানিদের, এমনকি বিশ্বও এই খবরের কথা জানতে পারত না যদি ইসরায়েলের একটি পত্রিকা এই গোপন তথ্য প্রকাশ না করত। সূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েল পাকিস্তানে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং এই প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কেন ইসরায়েল পাকিস্তানে ঢুকতে চায়?।

প্রকৃতপক্ষে, দাবি করা হচ্ছে যে ১০ থেকে ১১ জন পাকিস্তানির একটি প্রতিনিধি দল চুপচাপ ইসরায়েলে পৌঁছেছিল। ইসরায়েল নাকি তাদের পাসপোর্টে ভিসার কোনো স্ট্যাম্পও দেয়নি, যাতে কেউ জানতে না পারে তারা কারা। পুরো সফরটি গোপন রাখা হয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েলের একটি পত্রিকা এই খবর ফাঁস করে দেয়। এতে এমন হাঙ্গামা শুরু হয় যে পাকিস্তান সরকারকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পর্যন্ত দিতে হয়।

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো — পাকিস্তানের এই প্রতিনিধি দল ইসরায়েলে কীভাবে এবং কেন গেল? এবং এই পরিস্থিতি কি ভারতের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে? এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান সেই দেশ, যা ইসরায়েলকে তার চরম শত্রু মনে করে। পাকিস্তান ইসরায়েলি পাসপোর্টকে স্বীকৃতি দেয় না, এমনকি ইসরায়েলকে একটি দেশ হিসেবে মানেও না। পাকিস্তানের ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই। তাহলে পাকিস্তানের এই প্রতিনিধি দল ইসরায়েল সফরে গেল কেন?

দাবি করা হচ্ছে, ওই প্রতিনিধিদলে পাকিস্তানি সাংবাদিক, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট এবং কয়েকজন আইএসআই এজেন্টও ছিলেন। ইসরায়েল নাকি এই দলটিকে তাদের সংসদে নিয়ে গিয়েছিল। এছাড়া, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার স্থানেও তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। তারা হলোকাস্ট মিউজিয়ামেও গিয়েছিল, যেখানে তারা ইহুদিদের ওপর হওয়া গণহত্যা এবং নির্যাতনের ছবি দেখেছিল।

এই সবকিছু দেখার পর পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল বলেছিল যে ইসরায়েলিরা মুসলিমবিরোধী নয়। পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের মুখ থেকে এমন কথা শুনে পুরো পাকিস্তানে হৈচৈ পড়ে যায়। খবরটি ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান সরকারকে বিব্রত হতে হয়। সরকার জানায়, ওই দলটি নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে গিয়েছিল।

কিন্তু অনুমতি ছাড়া এই সফর কীভাবে সম্ভব হলো? এর পেছনে আসল খেলা কী?

প্রকৃতপক্ষে, এই পুরো পরিকল্পনাটি নাকি আমেরিকা করিয়েছে — ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে। আমেরিকা ও ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং পাকিস্তানকে তারা সেই কাজে ব্যবহার করতে চায়। পাকিস্তান ও ইরান দীর্ঘ সীমান্ত ভাগাভাগি করে। ইসরায়েল চায় পাকিস্তানের কিছু এলাকায় তার উপস্থিতি তৈরি করতে, যেখান থেকে ইরানকে পর্যবেক্ষণ করা যাবে এবং প্রয়োজনে হামলাও চালানো যাবে।

এছাড়া, পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলে থাকা আইএসআই এজেন্টরা নাকি ইসরায়েলকে ইরান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, এবং কোন অঞ্চলগুলো থেকে ইরানকে নজরদারিতে রাখা যেতে পারে তা ব্যাখ্যা করেছে।

এতে প্রশ্ন ওঠে — পাকিস্তান কি এসব নিঃশুল্কে করবে?

না, পাকিস্তান এর জন্য মূল্য নেবে — হয়তো অর্থ, হয়তো অস্ত্র। এবং সেই অর্থ পাকিস্তান বেলুচদের দমন করতে ব্যবহার করতে পারে। তবে ইসরায়েল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কোনো সহায়তা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান মূলত ইসরায়েলের সহায়তাকে নিজের অভ্যন্তরীণ উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহার করতে চায়, বিশেষ করে বেলুচদের দমন করতে।

এই ঘটনাগুলো আঞ্চলিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

0
438 views