
চতুর্থ দফা লোকসভা ভোটে বিক্ষিপ্ত অশান্তি
১৩ মে ২০২৪ ছিলো লোকসভা নির্বাচন-২০২৪ এর চতুর্থ দফা ভোট। এদিন পশ্চিমবঙ্গে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী লড়ছেন। তারকা প্রার্থীদের জমজমাট লড়াই ছিলো জমজমাট। রাজ্যে তৃণমূলের মনোনয়ন দেওয়া দুই ভিন্ন রাজ্যের তিন তারকা প্রার্থী হলেন ভারতের ৮৩ এর বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য প্রখ্যাত ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ, বর্তমানের ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠান ও বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা। তাছাড়াও তারকা প্রার্থীর তালিকায় আরও রয়েছেন। যেমন- মহুয়া মৈত্র, রাজমাতা অমৃতা রায়, টলিউড অভিনেত্রী শতাব্দী রায়, দিলীপ ঘোষ, বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী তথা লোকসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী প্রমুখ।
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন-২০২৪ এর চতুর্থ দফা ভোট কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে। তবে এদিন ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, নদীয়া, বর্ধমানসহ একাধিক জায়গা থেকে নানা অভিযোগ উঠে এসেছে। নির্বাচনের আগেরদিন রাত থেকেই এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ছিল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম। তাছাড়া যে সমস্ত ঘটনা গুলি ঘটেছিলো তার কিছু বর্ণনা দেওয়া হলো।
১) বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের গাড়িতে হামলা। বিজেপি দাবি করেছে বহরে তৃণমূল সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে। দিলীপ ঘোষ মন্তেশ্বরে যাওয়ার পথে হামলা চালান তৃণমূলের সমর্থকেরা। তার কনভয়ে কিছু গাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
২) দুর্গাপুরে বিজেপি ও তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে।
৩) দুর্গাপুরে বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ই ভোটকেন্দ্রে গেলে তাঁকে ধাক্কা দিয়েছেন তৃণমূলের কর্মীরা।
৪) রাণীগঞ্জ ও তেহট্টে সিপিএম কর্মীকে মারধর করেছে তৃণমূল।
৫) মেমারিতে বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছেন তৃণমূলের সমর্থকেরা।
৬) বড়ঞায় কংগ্রেস এজেন্টকে ঢুকতে না দিয়ে তাঁর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছেন তৃণমূলের সমর্থকেরা।
৭) বীরভূমের ইলমবাজার ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
৮) বীরভূমের সিউরিতে বিজেপির নির্বাচনী অফিস ভেঙে দিয়েছে তৃণমূল।
৯) বকটুইতে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
১০) সাঁইথিয়ায় বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাকে ঘিরে বিক্ষোভ করেছে তৃণমূল। এ সময় তারা ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান দিয়েছে।
১১) নলহাটিতে বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয়েছে।
১২) নদীয়ার চাপড়ায় ভোট না দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে তৃণমূল।
১৩) চাকদায় বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার ভোটকেন্দ্রে গেলে তৃণমূলের সমর্থকেরা ‘জয় বাংলা’ ও ‘গো–ব্যাক’ স্লোগান দেন।
১৪) তেহট্টে তৃণমূল সমর্থকেরা বাঁশ দিয়ে বিজেপি সমর্থকদের পিটিয়েছেন।
১৫) চাপড়ায় সিপিএম কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
১৬) মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে দুটি বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি তৃণমূল।
১৭) মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় কংগ্রেস এজেন্টকে বসতে দেয়নি তৃণমূল।
এদিন সকাল থেকে কোথাও এক দলের সমর্থকদের বিপক্ষের কর্মীদের মারধর, বুথ এজেন্টদের না ঢুকতে দেওয়া, এমনকি ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টার মতো একাধিক ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে সকাল ১১টার মধ্যেই এক হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমে বাড়তে থাকে এই সংখ্যা। বেলা আড়াইটের মধ্যে সেটি পৌঁছায় ১ হাজার ৭০৫ এ।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য বলেছেন, হতাশা থেকে এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল। তারা বুঝতে পেরেছে যে, মানুষ আর এবার দুর্নীতিবাজ তৃণমূলকে ভোট দেবে না।