logo

৫০% উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন পরিষেবা চালু থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাঙ্গন কেন খুলে রাখা যাবে না : এসআইও দীর্ঘদ


৫০% উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন পরিষেবা চালু থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাঙ্গন কেন খুলে রাখা যাবে না : এসআইও

দীর্ঘদিন লকডাউন কাটিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হলেও, রাজ্য সরকার পুনরায় ৩ জানুয়ারি থেকে সমস্ত শিক্ষাঙ্গন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ছাত্র সংগঠন এসআইও-র পক্ষ থেকে সম্পুর্নভাবে শিক্ষাঙ্গন বন্ধের এই ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হল উমরপুর বাসস্টান্ডে। প্রতিবাদে সামিল হয়ে সংগঠনের উত্তর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ইত্তেহাদ মাওদূদি বলেন, “করোনা বৃদ্ধির জন্য সমস্ত কিছু চালু রেখে প্রথমেই শিক্ষাঙ্গনে লকডাউন কোনভাবেই মানা যায় না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৫০% উপস্থিতি নিয়ে সিনেমা হল, শপিংমল, পানশালা
সহ অন্যান্য পরিষেবা চালু রাখা যাবে, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন খুলে রাখা যাবে না?"। তিনি আরও বলেন," স্কুল-কলেজের  অনেক শিক্ষার্থী এরই মধ্যে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে জীবিকার সন্ধানে রত, অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীর পরিবার বিয়ে দিয়েছেন, স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, সেখান থেকে তাদের হয়তো ফিরিয়ে আনা যাবে না। আমরা জানি না আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। "  ইত্তেহাদ মাওদূদি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, " করোনা বাড়লেই বারবার শিক্ষাঙ্গন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া কোন সমাধান হতে পারে না। জাতির মেরুদন্ড শিক্ষাকে বাচাতে গেলে কোভিড-বিধি মেনে শিক্ষাঙ্গন চালানোর জন্য একটি সর্বজনীন পদক্ষেপ গ্রহণ করার এখনই সময়। অবিলম্বে রাজ্য সরকারের উচিত শিক্ষাঙ্গন চালানোর জন্য বিকল্প কোন গঠনমূলক ও কার্যকারী পন্থা ঘোষণা করা।"

সংগঠনের দাবি সমূহঃ
১) কোভিড-১৯ এর সতর্কতা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পঠনপাঠন জারি রাখতে হবে। 
বিদ্যালয় চালানোর পরামর্শ:¬
ক) শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা সকাল ৯ টা বা সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে সর্বাধিক তিন ঘন্টা ক্লাসে অংশ গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে, অন্য একটি ব্যাচ  দুপুর ১টা থেকে অথবা ২টা থেকে শুরু করে তিন ঘন্টার জন্য উপস্থিত থাকতে পারে ( ক্লাসের সময় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্ধারিত হবে)।
খ) মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০ সেখানে একসাথে ৫০% শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকতে পারে। যে সমস্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০র অধিক সেখানে ২৫% শিক্ষার্থী একসাথে ক্লাসে যোগ দিতে পারে।
গ) শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসবে। শিক্ষার্থীদের একে অপরের থেকে দুই মিটার দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ঘ) শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অন্যান্য স্কুল কর্মী যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে বা কোভিড-১৯ আক্রান্তের সম্ভবনা রয়েছে অথবা কোয়ারান্টাইনে রয়েছে তাদের স্বাস্থ্য বিভাগের দ্বারা নির্ধারিত দিনের সংখ্যা অতিক্রম করেই কেবল স্কুলে আসতে পারবে।
ঙ) যে সমস্ত পড়ুয়াদের পরিবার কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে তাদের বিদ্যালয় আসা থেকে বিরত রাখতে হবে।
চ) স্কুল প্রাঙ্গণ, আসবাব, স্টেশনারি, স্টাফ রুম, জলের ট্যাঙ্ক, রান্নাঘর, ক্যান্টিন, পরীক্ষাগার, গ্রন্থাগার, এবং শৌচাগারকে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
ছ) রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে যেহেতু জলবাহিত রোগের সংক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে তাই বিদ্যালয়ের জলের উৎস যেমন ট্যাঙ্ক এবং নলকূপ কে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
জ) প্রতিটি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল থার্মোমিটার, মাক্স, স্যানিটাইজার এবং সাবানের পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ রাখতে হবে।
ঝ) বিদ্যালয়ের স্টাফ রুমেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। যে জায়গাগুলিতে পানীয় জল পাওয়া যায়, হাত ধোয়া হয় সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গোল মার্ক কাটতে হবে যাতে করে কোভিড-১৯ এর নিয়মাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করা যায়।

২) স্কুলছুট সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়। এই স্কুলছুট কোভিড-১৯ ও লকডাউনের কারণে মারত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির হার রোধ করতে সরকারের উচিত আকর্ষণীয় এবং গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। স্কুলছুটদের পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছাতে হবে।

৩) ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত পড়ুয়াকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন ও পুরো পদ্ধতি সরলীকরণ করতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পের আয়োজন করা যেতে পারে।

ধন্যবাদান্তে,
আনোয়ার হোসেন
সেক্রেটারি, এসআইও উত্তর মুর্শিদাবাদ
যোগাযোগ নং: 8145316318

3
14673 views